নদীর নাম মধুমতি। এই নদীতে আগে বড়ো বড়ো পাল তোলা নৌকা চলত। মধুমতি নদীর তীরে অবারিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি টুঙ্গিপাড়া গ্রাম। সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা এই গ্রামে ঐতিহ্যবাহী শেখ পরিবারের বসবাস। ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ শেখ লুৎফর রহমান ও সায়েরা খাতুনের ঘর আলো করে জন্ম নেয় ফুটফুটে এক শিশু। বাবা মা আদর করে শিশুটিকে ডাকেন 'খোকা' বলে। আবহমান বাংলার মেঠোপথে হেঁটে, ধুলোবালি গায়ে মেখে, নদীতে সাঁতার কেটে, বর্ষার কাদাজলে ভিজে দুরন্ত শৈশব, কৈশোর পার করে বাবা-মায়ের অতি আদুরে সেই ছোট খোকা। আজকে আমরা সেই খোকার গল্প শুনব-
একদিন স্কুল থেকে ফেরার পথে অসহায় এক শিশুর সঙ্গে দেখা হয় খোকার। শিশুটির গায়ে কোনো জানা ছিল। না। শিশুটিকে দেখে মায়া হয় তার। খোকা নিজের জামা খুলে পরিয়ে দেয় শিশুটিকে।
বাড়ি ফিরলে, “তোর জামা কই?' মায়ের প্রশ্ন।
খোকা উত্তরে বলে, “মা স্কুল থেকে ফেরার সময় দেখলাম একটি ছেলের গায়ে কোনো জামা কাপড় নেই। এই শীতে ওর খুব কষ্ট হচ্ছিল। তাই আমার জামা খুলে ওকে পরিয়ে দিয়েছি। ছেলেটা কি যে খুশী হয়েছে, মা!” সায়েরা খাতুন একটু চিন্তিত হলেন ছেলের কথা শুনে। আবার পরক্ষণেই গর্বে তার বুকটা ভরে উঠল। কত উদার হয়েছে তার ছেলেটি।
শৈশব থেকেই থোকা ঠিক এমনই উদার ও মহানুভব ছিলেন। যিনি দশ বছর বয়সেই নিজের গায়ের জামা খুলে অন্যকে দান করেন।
মুষ্টি ভিক্ষার চাল সংগ্রহ করে গরিব ছেলেমেয়েদের বই কিনে দেয়া, পরীক্ষার খরচ বহন করা, বস্ত্রহীন পথচারী শিশুকে নিজের নতুন জামা পরানোর মতো মানবিকতার পরিচয় দেন স্কুল জীবনেই। এতক্ষণ আমরা যাঁর গল্প জানলাম, বলোতো কে সেই খোকা?
ঠিক ধরেছ, তিনি হলেন আমাদের বাংলার অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
কালক্রমে এই থোকাই হয়ে ওঠে বাংলার মহানায়ক। থোকা থেকে মহানায়ক হয়ে ওঠার পেছনে রয়েছে তাঁর অদম্য সাহস, সীমাহীন আত্মত্যাগ, নির্ভীক নেতৃত্ব আর গভীর দেশপ্রেম। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর দায়িত্ব নেয়ার মতো মহান গুণটি তিনি হৃদয়ে ধারণ করতেন শৈশব থেকেই। তাঁর দৃঢ় নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে আমরা অর্জন করি স্বপ্নের স্বাধীনতা, পাই স্বাধীন বাংলাদেশ।
কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে তখনো গোপনে অবস্থান করছিল স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা। তারা পরিকল্পনা করছিল। সোনার বাংলাদেশের স্বপ্নকে ধূলিসাৎ করতে। সেই ঘূর্ণিত নীল নকশা অনুসারে ১৯৭৫ সালে ১৫ই আগস্ট রাতে স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুদের গুলিতে নির্মমভাবে প্রাণ হারাতে হলো বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের। সেদিন ঘাতকদের বুলেট থেকে রেহাই পায়নি বঙ্গবন্ধুর আদরের ১০ বছরের ছোট্ট শিশু শেখ রাসেল পর্যন্ত। বিদেশে থাকায় সেদিন বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা আর শেখ রেহানার প্রাণ রক্ষা পেয়েছিল।
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এই কালজয়ী গানটি রচনা করেছেন- হাসান মতিউর রহমান, গানটিতে সুর দিয়েছেন— মলয় কুমার গাঙ্গুলী এবং তিনিই প্রথমে গানটি পরিবেশন করেন, পরে গানটি গেয়েছেন আমাদের সবার প্রিয় শিল্পী- সাবিনা ইয়াসমিন।
কাছের মানুষটি যখন হারিয়ে যায়, আমরা অনেক দুঃখ পাই, শোকে ডুবে যাই। বাংলাদেশের মানুষের জন্য বঙ্গবন্ধু তেমনই আপন একজন। যাঁর চলে যাওয়াতে গোটা জাতি ডুবে গেছে শোকের সাগরে। কিন্তু আমরা জানি কীর্তিমানের মৃত্যু নাই। শহিদদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে চলার দৃপ্ত শপথ নিতে আমরা প্রতি বছর ১৫ই আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করি।
এই অধ্যায়ে জামরা যেভাবে অভিজ্ঞতা পেতে পারি-
এর আগের পাঠে আমরা মৌলিকরং ও মিশ্ররং সম্পর্কে জেনেছি। বর্ণচন্দ্রের মাধ্যমে দেখেছি কোন কোন রং মিলে কি রং তৈরি হয়।
বিজ্ঞানের ভাষায় কালো আর সাদা আসলে কোনো রং নয়। কী, অবাক লাগল? তাহলে চলো জেনে নেই এ সম্পর্কে-
সাদাঃ আলোর উপস্থিতি হলো সাদা। সূর্যের আলোর সব রং মিলে তৈরি করে সাদা রং ছবি আঁকার জন্য আমরা যে সাদা রং পাই তা আসলে সাদা রত্নক পদার্থ। সাদা রং শান্তি ও বিশুদ্ধতার প্রতীক।কালো: আলোর অনুপস্থিতি হলো কালো। তবে ছবি আঁকার জন্য সাদা রঙের ন্যায় কালো রঞ্জক পদার্থ ব্যবহার করা হয়। কালো হলো শোকের রং। ২৫ই আগস্টের জাতীয় শোক দিবসে স্কুলে আয়োজিত অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে আমরা একটি কাজের পরিকল্পনা করব।
এই অধ্যায়ে আমরা যা যা করতে পারি-
বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে, সোনার বাংলাদেশ গড়ার দৃপ্ত শপথ নেব আমরা। এইভাবে সম্মান জানাব স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের স্মৃতির প্রতি।
এই অধ্যায়ে আমার অনুভূতি লিখি
Read more